বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তঘেষা ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ’র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের গত নভেম্বর মাসে মেয়াদ ৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম থেকে জনপ্রতিনিধিদের সরিয়ে দিয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসন। মুলত নভেম্বর মাস থেকে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের সেবা ও বিচারিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ঘুমধুম ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার জনগণ।
রবিবার (৫ জানুয়ারি) সরেজমিনে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, সেবা প্রত্যাশীরা বিভিন্ন আবেদন নিয়ে পরিষদে গিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদসহ বিভিন্ন সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ইউনিয়নবাসী। অনেকেই আবার বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করতে যাওয়া কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা জানান, জন্ম নিবন্ধনের আবেদন নিয়ে এসে দেখি পরিষদ তালাবদ্ধ, বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছি। এদিকে প্রত্যয়ন নিতে যাওয়া কয়েকজনের সাথে কথা বললে জানান, চেয়ারম্যান না থাকায় অসম্পূর্ণ প্রত্যয়ন নিয়ে ফিরে যাচ্ছি।চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, পরিষদে কেউ না থাকায় কাজ অসম্পূর্ণ রেখে ফিরে যেতে হচ্ছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের সেবা প্রত্যাশীদের জন্মনিবন্ধন, চেয়ারম্যান সনদ, মৃত্যু সনদ, ওয়ারিশ সনদ, পাসপোর্ট’র জন্য কাগজপত্র সত্যায়িতকরণ সহ নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাছাড়া ঘুমধুম ইউনিয়ন মিয়ানমারের সীমান্তঘেষা হওয়ায় এখানে কোন গবাদিপশু বিক্রি করতে হলে পরিষদের সনদের প্রয়োজন হয়। এতে পশু পালনকারীদেরও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের দায়িত্ব শেষ হওয়ায় বিচার প্রার্থীদের শালিস দরবার নিয়ে সমাধানের জন্য পুলিশ ও আদালতের দারস্থ হতে হচ্ছে। ফলে গ্রাম্য আদালতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ঘুমধুম ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ’র হিসাব সহকারী উখিয়াই মং বলেন, জনপ্রতিনিধি না থাকায় সেবাপ্রত্যাশীরা ফিরে যাচ্ছেন। প্রশাসক নিয়োগ হলে সমস্যা সমাধান হবে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাজাহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের জন্য যাচাই-বাছাই পূর্বক একটি তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে প্রশাসক নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হলে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদে পূণরায় সেবা কার্যক্রম চালু হবে।