রায়পুরার সড়কটি যেন ধূলাবালির স্বর্গরাজ্যে পরিণত

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার প্রাণকেন্দ্র বিন্দু রায়পুরা পৌর এলাকায় প্রধান আঞ্চলিক সড়কে দুর্গম চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষ চলাচল করে। রায়পুরা বাসস্ট্যান্ডের পর পিটিআই মোড় থেকে পান্তশালা ফেরিঘাট পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলাচলের কারণে অতিরিক্ত ধুলাবালির দূষণে অতিষ্ঠ জনজীবন, চরম হুমকিতে জনস্বাস্থ্য। মুখে মাস্ক, রুমাল ব্যবহার করেও স্বস্তি পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ।

এই প্রধান আঞ্চলিক সড়কটি যেন ধুলাবালির রাজ্য। এতে অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থী,পথযাত্রী ও সাধারণ মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়-দুর্গম চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষেরা একমাত্র প্রধান আঞ্চলিক সড়কে অতিরিক্ত ধুলাবালি উড়ছে। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শিশু, বৃদ্ধা, পথযাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দার আবাসস্থলে বসবাসে অতিষ্ঠ জনজীবন ও চরম হুমকিতে জনস্বাস্থ্য। যানবাহন চলাচলের কারণে প্রধান আঞ্চলিক সড়ককে কুয়াশার মতো ধুলা উড়তে দেখা গেছে। প্রধান আঞ্চলিক সড়কে প্বার্শবর্তীতে অবস্থিত প্রাইমারি টির্চাস ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, মাদ্রাসা, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, নরসিংদী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, কেন্দ্রীয় কবরস্থান ও খাদ্য গুদাম। হঠাৎ স্থানীয় এলাকাবাসীর মৃত্যু হলে কেন্দ্রীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করতে এই আঞ্চলিক সড়ক চলাচলের অনুপযোগী।

অতিরিক্ত ধুলাবালির কারণে স্থানীয় এলাকাবাসীর আবাসস্থলে বসবাস করাও অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রধান আঞ্চলিক সড়কের পাশে আমাদের আবাসস্থল। অতিরিক্ত ধুলাবালির দূষণে আমরা অতিষ্ঠ জনজীবন, চরম হুমকিতে জনস্বাস্থ্য। এই প্রধান আঞ্চলিক সড়কে অতিরিক্ত ধুলাবালি একটাই প্রধান কারণ কতিপয় ক্ষমতাশালী লোক মেঘনা নদী থেকে অবৈধ বালুর উত্তোলন করে জমজমাট ব্যবসা করে।এই অবৈধ বালু বিক্রি করতে দিনরাত ট্রাক্টর বেপরোয়ায় প্রধান আঞ্চলিক সড়কে চলাচল করে। এতে প্রচুর বালি প্রধান আঞ্চলিক সড়কে স্তপ হয়ে পড়তে থাকে।

আরও দেখা যায়, বর্তমানে আবহাওয়া শুষ্কতার কারণে যানবাহন চলাচলের সঙ্গে প্রচন্ড পরিমাণে ধুলাবালির ছড়িয়ে নানা রোগের আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এমনকি আবাসস্থলও বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ধুলাবালির দূষণে সাধারণ মানুষের নানান রোগে সমস্যায় ফেলছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে কর্তৃপক্ষের নজরদারি কামনা করছেন সাধারণ মানুষ। ধুলাবালির এ সমস্যা থেকে সমাধান পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত নিরাময়ের অনুরোধ জানান তারা।

চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধুলাবালিতে বিভিন্ন রোগের জীবাণু থাকে। এতে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। ধুলাবালি মানব শরীরের ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। সবসময় ধুলাবালি বেষ্টিত পরিবেশে থাকলে ফুসফুসে রক্তপ্রবাহ দুর্বল হয়। সর্দি, কাশি, অ্যালার্জি, টনসিল প্রদাহ, গলাব্যথা, অ্যাজমাসহ বিভিন্ন রোগ হয়।

তারা আরও বলেন, ধুলাবালি থেকে যদি মানুষ রক্ষা পায়, মানুষের আয়ু আরও বৃদ্ধি পাবে।

রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ আদিল মাহমুদ জানান,আমি এ থানায় নতুন এসেছি।এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অনিয়মের অভিযোগ পায়নি।আপনাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি কিছু লোক অবৈধভাবে বালুর ব্যবসা করছে।আমি অতি দ্রুত এসিল্যান্ডের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান,আমি নতুন এসেছি এধরনের কোনো অভিযোগ পায়নি।খোলা ট্রাকে বালু পরিবহন জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং পরিবেশ দূষণ করছে।
তিনি আরো বলেন, চলাচলে এভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি করা, পরিবেশ ও বায়ুদূষণের বিষয়টি দণ্ডবিধির ২৯১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক জেল, জরিমানা যেকোনো কিছু করতে পারেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email