জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের স্মরণে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে
উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদুয়ান আহমেদ রাফি, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মদ, ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) মো. শাহিন মিয়া, শহিদ পরিবারের নিহত জোবায়েদ এঁর মা হোসনে আরা বেগম ও নিহত কবির মিয়ার স্ত্রী সামিয়া বেগম।
অনুষ্ঠানে জুলাই মাসে আহত মামুন, আগস্টে আহত জাহিদ হোসেন হৃদয়, মেহেদি হাসান জিন্না, ছাত্র অর্ন ও ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত জোবায়েদ এঁর মা এবং নরসিংদিতে গুলিতে নিহত কবিরের স্ত্রী সামিরা বেগম বক্তব্য রাখেন।
আহত মামুন বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দুর্বত্তরা আমার এক হাত কেটে আমাকে পঙ্গু করে দিয়েছে। নিহত কবিরের স্ত্রী সামিয়া বেগম বলেন আমার স্বামী আগস্ট মাসে নরসিংদিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। আমি এখন সন্তানদের নিয়ে দিশেহারা।
নিহত জোবায়েদ এঁর মা হোসনে আরা বেগম বলেন, আমি ঢাকার শনির আখড়ার বাসায় স্বামী সন্তানদের নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতাম। ঘটনার দিন ৪ আগস্ট আমার ছেলে জোবায়েদ সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে খবর পাই যাত্রাবাড়ী এলাকায় সে পুলিশের গুলিতে মারা যায়। তারপর রাত ১১ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার লাশ পাই। আমার উপার্জনশীল ছেলেকে হারিয়ে আমি এখন দিশেহারা হয়ে গেছি। আমি এখন কি করব বুঝতে পারছিনা। বক্তব্যের সময় তিনি বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে শান্তনা দেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন তার বক্তব্যে বলেন, যুগে যুগে এদেশে স্বৈরাচার আন্দোলন হয়েছে। প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ভূমিকা থাকে। এবারে আন্দোলনটি এমনি ছিল। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সারাদেশে অসংখ্য মানুষ মারা গেছে, আহত হয়েছে হাজারও মানুষ। আমি জেনেছি ভৈরবেও এবারের আন্দোলনে কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছে এবং ঢাকা – নরসিংদীতে ভৈরবের জোবায়েদ ও কবির গুলিতে নিহত হয়। দুজনের নিহত ঘটনায় আমরা ব্যথিত দুঃখিত।জোবায়েদ এঁর মা অনুষ্ঠানে কেঁদে কেঁদে বক্তব্যে তার ছেলের মৃত্যুর করুন কাহিনী বলেছেন। তার বক্তব্য শুনে আমার চোখে পানি এসেছে। ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। এখন নতুন সরকার ক্ষমতায় আছে। তিনি বলেন, আসুন আমরা সকলে মিলে দেশটাকে সুন্দর করে গড়ে তুলি। সকলে সহযোগীতা করলে এদেশ সোনার বাংলায় পরিণত হবে।