দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গেই থাকছেন শেখ হাসিনা, ঘুরতে দেখা গেছে পার্কে

গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিনই বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ছাড়েন তিনি। পালিয়ে যান ভারতে। তখন থেকে দেশটিতে অবস্থান করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

ভারতের কোথায় তিনি আছেন, সেই স্থানের নাম প্রকাশ্যে আসেনি। কেবল জানা গিয়েছিল, দেশটির সরকারি তত্ত্বাবধানে দিল্লির একটি সেফ হাউসে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। এরমধ্যে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস শেখ হাসিনার বিষয়ে চাঞ্চল্যকর খবর দিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ভারতের রাজধানী দিল্লিতে মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা। এমনকি তাকে কিছু লোকজন নিয়ে দিল্লির অন্যতম অভিজাত পার্ক লোদি গার্ডেনেও ঘুরতে দেখা গেছে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা যখন একদফা দাবিতে গণভবনের দিকে মিছিল সহকারে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন শেখ হাসিনা বাংলাদেশের একটি সামরিক বিমানে করে ভারতে পালিয়ে যান। ভারতের গাজিয়াবাদের কাছে একটি বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে নামিয়ে দিয়ে দেশে ফিরে ওই বিমানটি।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দিল্লির সাথে ঢাকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও পররাষ্ট্রনীতিতে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। আওয়ামী লীগের টানা দেড় দশকের শাসনমলে এই সরকারকে সমর্থন দিয়েছে দিল্লি। তার ক্ষমকাচ্যুতিতে এর আঁচ লেগেছে দুই দেশের সম্পর্কেও।

এদিকে, গত জুলাই-আগস্টে আন্দোলন-বিক্ষোভের সময় শত শত মানুষ হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনাকে দায়ী করছে বাংলাদেশের ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ফিনান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, ভারতের সাথে (স্বাক্ষরিত) বাংলাদেশের চুক্তি অনুযায়ী, আমরা তাকে বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণের দাবি জানাতে পারি। আপাতত, আমরা আশা করি, তাকে দিয়ে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা ঘটাতে দেবে না ভারত। কারণ, তিনি মিথ্যা ও ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন।

শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ তাকে (হাসিনাকে) ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতেই চায়, তবে এক্ষেত্রে শর্ত থাকবে, তাকে চুপ থাকতে হবে।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সরকারের সময় দায়িত্বপালন করা সাবেক পররাষ্ট্র সচিব এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে আসার অনেক নজির রয়েছে। আমরা সবসময় তাদের (পালিয়ে আসা নেতাদের) থাকার অনুমতি দিয়েছি এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা আমাদের ইচ্ছাকে সম্মান করে রাজনৈতিক কার্যকলাপ থেকে দূরে থেকেছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email