ভেঙে গেছে হালদার-গোমতির বাঁধ,হু হু করে ঢুকছে পানি

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার নাজিরহাট নতুন ব্রিজ এলাকায় হালদার তীররক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে।

বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে লোকালয়ে পানি ঢুকছে।

রাত ১২টার দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাঁধ উপচে ও ভেঙে যাওয়া বাঁধের অংশ দিয়ে পানি ঢুকে উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত শতাধিক ঘরবাড়ি ডুবে গেছে।

পানি প্রবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সোহাগ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত বুধবার থেকে হালদার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্তত ২২টি স্থানে বাঁধ ভেঙেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভাঙা অংশে জিও ব্যাগ ফেলে পানি প্রবেশ বন্ধের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল হক বলেন, পানি স্রোতের তীব্রতা এত বেশি যে, কেউ দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না।
বাঁধ ভেঙে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ওই সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা জানিয়েছেন।

এদিকে, গোমতী নদীর বাঁধও আর পানি আটকাতে পারছে না। টানাা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ এবং ভারত থেকে আসা উজানের পানিতে ২৭ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে কুমিল্লার গোমতী নদী। বর্তমানে নদীটির পানি বিপৎসীমার ১১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে গোমতীর বেড়িবাঁধ ভেঙে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও অনেকে বলছেন, বাঁধ ইতোমধ্যেই ভেঙে গেছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে নদীর বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুরবরিয়া অংশে— বাঁধের ওপর দিয়ে পানি টপকে অপর পাশে যেতে দেখা গেছে। পানির এই প্রবাহ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে সেনাবাহিনীর একটি দল। তারা অনেক চেষ্টা করেও পানির প্রবাহ আটকাতে না পেরে তারা ফিরে চলে গেছেন। এরমধ্যে প্রবাহিত পানিতে প্লাবিত হতে শুরু করেছে আশপাশের গ্রামগুলো।

অন্তত ৩০ ফুট এলাকাজুড়ে বাঁধ উপচে পানি প্রবাহিত হতে দেখে প্রত্যক্ষদর্শীরা বাঁধ ভেঙে গেছে ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন বলেন, কুমিল্লার বুড়িচং এবং ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলা শতভাগ প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পানি বাড়তে পারে কুমিল্লা নগরীতেও।

বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার জানান, ‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কিছুক্ষণ আগে বাঁধ ভেঙে পড়ার একটা গুজব রটেছিল। বাঁধ না ভাঙলেও বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে অপর পাশে যাচ্ছে। এটা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বাঁধ ভেঙে পড়ারও আশঙ্কা রয়েছে। যদি ওই এলাকার বাঁধ ধসে পড়ে তাহলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা পর্যন্ত প্লাবিত হতে পারে।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবদুল লতিফ বলেন, গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। আমরা গত কয়েকদিন ধরেই স্থানীয় মানুষজনকে নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে আসছি।

ওই এলাকার প্রতিটি মসজিদের মাইকে মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাওয়ার জন্য বার বার মাইকিং করা হচ্ছে।

সূত্র: ইত্তেফাক

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email