বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের আলী মিয়া পাড়া এলাকায় ফোর এইচ গ্রুপের রাবার বাগানের পাহারা ঘরে জেসমিন আক্তার (২৩) নামের এক গৃহবধূকে এসিড খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের স্বামী মোহাম্মদ তোহা প্রকাশ (পেটান)কে পুলিশ আটক করেছে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, অভিযুক্ত পেটান ডিভাইন তথা ফোর এইচ গ্রুপে শ্রমিক ও নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুরে বাইশারীর নারিচবুনিয়া সাকিনের ফোর এইচ কোম্পানির ১৫ নম্বর বাগানের পাহারা ঘরে কিস্তির টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ বাঁধে। এনজিও’র কিস্তির জন্য রাখা আড়াই হাজার টাকা না দেওয়ায় প্রথমে স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করে পেটান। পরে তাকে জোর করে এসিড খাওয়ায়।
অবস্থা গুরুতর হলে প্রথমে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করানো হয়। পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে জেসমিনের মৃত্যু হয়।
নিহতের ছোট ভাই মো. নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে পেটানকে গ্রেপ্তার করে।
নিহতের কলেজ পড়ুয়া ছোট বোন মায়মুনা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, “আমার বোনের সংসারে দুটি ছোট বাচ্চা রয়েছে। মাত্র সাত দিন আগে তাকে রাবার বাগানের পাহারা ঘরে নিয়ে যায় দুলাভাই পেটান। সেখানেই কৌশলে এসিড খাইয়ে তাকে হত্যা করা হয়। আমরা ন্যায়বিচার চাই।”
এদিকে ফোর এইচ গ্রুপ তথা ডিভাইন গ্রুপের স্থানীয় অফিসে গেলে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। তবে বাগানের পাহারা ঘরে এসিড রাখা এবং মাদকাসক্ত কর্মীর কাছে এসিড রাখার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও কোম্পানির পক্ষ থেকে কোনো সদুত্তর মেলেনি।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাশরুরুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন, “গৃহবধূকে জোরপূর্বক এসিড খাওয়ানোর অভিযোগে স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে।