বৈরী আবহাওয়া ও সাগর উত্তাল থাকার কারণে গত চার দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সেন্টমার্টিনবাসীর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
রোববার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে এসব বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে হঠাৎ নিম্নচাপ ও অমাবস্যার জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কারণে ঢেউয়ের তীব্রতা বেড়ে গেছে।
জোয়ারের পানির তোড়ে দ্বীপের বেশ কয়েকটি অংশের অনেক গাছপালা ভেঙে গেছে। লোকালয়ে সাগরের লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে প্রায় শতাধিক বসতবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। ঢেউয়ের আঘাতে বিলীন হয়ে গেছে দ্বীপের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কের দিন কাটাচ্ছেন। জরুরি ভিত্তিতে দ্বীপের চারিদিকে জিওব্যাগ বা ব্লক ফেলানো না হলে হয়তো এমন একদিন আসবে, মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে দেশের শ্রেষ্ঠতম পর্যটন স্পট সেন্টমার্টিন দ্বীপ।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সৃষ্ট নিম্নচাপ ও অমাবস্যার জোয়ারের পানি বৃদ্ধি হওয়ার কারণে উত্তাল ঢেউয়ের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পাশাপাশি সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুটের অধিক উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে ঢেউয়ের তীব্র আঘাতে দ্বীপের বেশ কয়েকটি পয়েন্ট ভাঙনের কবলে পড়েছে। পানির তোড়ে উপকূলবর্তী অনেক গাছপালা ভেঙে লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে প্রায় এক শতাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। বলতে গেলে দ্বীপের সাড়ে ১১ হাজার বাসিন্দা আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
পাশাপাশি বৈরী আবহাওয়া ও সাগর উত্তাল থাকায় গত ৪ দিন ধরে টেকনাফ থেকে কোন প্রকার যাত্রী ও মালবাহী একটি ট্রলার দ্বীপে পৌঁছাতে পারেনি। এতে দ্বীপের বাসিন্দাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
এব্যাপারে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ জানান, দুর্ঘটনার আশঙ্কায় গত বুধবার দুপুর থেকে চার দিন যাবত সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে কোন প্রকার মালামাল আনা-নেওয়া করতে পারেনি দ্বীপবাসী। অনেক দিন মজুর কর্মহীন অবস্থায় দুর্বিষহ সময় পার করে যাচ্ছেন। আবহাওয়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার নৌযান চালু হবে বলেও আশা করছেন তিনি।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, বৈরী আবহাওয়া ও সাগর উত্তাল থাকার কারণে উক্ত নৌ-পথে সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তবে দ্বীপের বাসিন্দাদের খাদ্য সংকট নিরসনে কোন সমস্যা হলে জরুরি ভিত্তিতে তা সমাধান করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আবহাওয়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌযান চালু করা হবে।