কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের বাংলা বাজার এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি সড়ক আট বছরেও মেরামত হয়নি। বাংলা বাজার হতে বড়লই বাজার গামী সড়কটিতে বন্যায় সৃষ্ট ক্ষত আজও শুকায়নি। সড়কটির ক্ষত ভোগাচ্ছে তিন গ্রামের মানুষকে। বন্যার কবলে পড়ে সড়কটির একাধিক জায়গায় ভেঙে গভীর খালের সৃষ্টি হয়। সেই থেকে ভাঙা সড়কে যাতায়াতে কলাগাছের ভেলাই ভরসা স্থানীয়দের।
বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালে বাংলা বাজার থেকে বড়লই বাজার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের গ্রামীণ কাঁচা সড়কটি পুনঃনির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের বন্যায় সড়কের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরমধ্যে বাংলা বাজার সংলগ্ন সড়কটির দুই স্থানে ভেঙে গভীর খালের সৃষ্টি হয়। বন্ধ হয়ে যায় সড়ক যোগাযোগ। ফলে বাংলা বাজার, চর বড়লই ও সারডোব গ্রামের অন্তত ছয় হাজার মানুষ যাতায়াতের ভোগান্তিতে পড়েন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটির এক জায়গায় ২৫ ফিট ও আরেক জায়গায় প্রায় ৭০ ফিটের মত গভীর খালের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা ছোট খালের উপর বাঁশের সাঁকো দিয়েছেন। আর বড় খাল পারাপারে বানিয়েছেন কলাগাছের ভেলা। ছোট্ট ভেলায় চড়ে নারী শিশুসহ অনেকেই ঝুঁকি খাল পারাপার হচ্ছেন।
চর বড়লই গ্রামের বাসিন্দা হবিউল্লা মিয়া বলেন, রাস্তা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে কলাগাছের ভেলা বানিয়ে কোন রকমে চলাচল করছি। কলা গাছের ভেলা আর কয়দিন টিকে। সপ্তাহ যেতে না যেতে নতুন করে ভেলা বানাতে হয়। এলাকার কলাগাছ, ভেলা বানাতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে আর কত দিন চলবে? আমাদের কষ্ট দেখার কি কেউ নাই?
স্থানীয় মাদরাসা শিক্ষক আশরাফুল হক জানান, আট বছর আগের বন্যায় সড়কের দুই জায়গায় ভেঙে যায়। স্থানীয় ভাবে বাঁশ জোগাড় করে এক জায়গায় সাঁকো দেয়া হয়েছে। কিন্তু আরেক জায়গায় বড় খাল। সেখানে সাঁকো বানানো সম্ভব হয়নি। ভাঙা অংশে কলাগাছের ভেলা দিয়ে চলাচল করতে হয়। এতে তিন গ্রামের অন্তত সাত থেকে আট হাজার মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে। ভেলায় পারাপারের হতে গিয়ে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। সড়কের ভাঙা অংশের মেরামতের জন্য স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে বহুবার অনুরোধ করে লাভ হয়নি। তারা শুরু আশ্বাসই দেয়। সড়কটি মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু বলেন, ” আমি দায়িত্ব গ্রহনের পর নিজেই ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি। ওখানে সড়কের দুই জায়গায় গভীর খালের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের এমন পরিনতিতে ওখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সড়কে যে খালের সৃষ্টি হয়েছে তা মেরামতের সক্ষমতা ইউনিয়ন পরিষদের নাই। সড়কটি মেরামতের জন্য আমি ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করছি। আগামী অর্থবছরে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে মাটি ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করা হবে এমন আশ্বাসও পেয়েছি।