কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড় কেন্দ্রিক অপহরণ চক্রের ৫ সদস্যকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করেছে পুলিশ।
গত শুক্রবার (১৮ জুলাই) অটোরিকশা চালক পাভেল চাকমা অপহরণ এবং দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ে জড়িত ছিল বলে শনাক্ত করার তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের লামার বাজার সংলগ্ন মেরিন ড্রাইভে এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।
আটককৃতরা হল, চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের আবদুল হাকিম পাড়ার নুরুল কবিরের ছেলে আব্বাস উদ্দিন (৪২), একই এলাকার আব্দুল হাকিম ভুট্টোর ছেলে সাকিবুল ইসলাম (২২), সফি আলমের ছেলে ফরহাদ মিয়া (১৯), একই উপজেলার ডেমুশিয়া এলাকার মৃত ইউনুছ আহাম্মদের ছেলে মো. রবিউল হোসেন (২৭), সাহাব উদ্দিনের ছেলে মো. তাওসিফ (১৯)।
এই সময় ১টি দেশীয় তৈরী পাইপ গান, ৩টি শটগানের কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে।
এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, গত ১৭ জুলাই শুক্রবার সকালে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের হরিখোলা এলাকার বাড়ী থেকে পাভেল চাকমা অটোরিকশা নিয়ে বের হন। তিনি পার্শ্ববর্তী বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর স্টেশনে ভাড়ার সিরিয়াল দিতে গাড়ী নিয়ে রওনা দেন। পথিমধ্যে হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়কের সোনালী ব্যাংক ঢালা নামক এলাকায় পৌঁছলে পাহাড় থেকে নেমে আসা একদল অস্ত্রধারী তার গাড়ীটি গতিরোধ করেন। পরে পাভেল চাকমাকে অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে নিয়ে যায়। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়কের সোনালী ব্যাংক ঢালা নামক এলাকায় অপহৃত যুবককে ছেড়ে দেয়া হয় বলে।
পাভেল চাকমা টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের হরিখোলা চাকমা পাড়ার বাসিন্দা মৃত চন্দ্রমনি চাকমার ছেলে।
স্বজনদের বরাতে ওসি বলেন, সকালে ঘটনাটি শোনার পর থেকে পুলিশ অপহৃতকে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে। এক পর্যায়ে অপহরণকারিরা তাকে ছেড়ে দিতে স্বজনদের কাছে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে কয়েক দফা যোগাযোগের দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণে অপহৃতকে ছেড়ে দিতে রাজী হয়। অপহরণকারিদের কথা মত মুক্তিপণের টাকা নিয়ে পাহাড়ের বিশেষ একটি এলাকায় যান। অপহরণকারিদের হাতে দাবি করা দেড় লাখ টাকা তুলে দেওয়া হয়। পরে বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে অপহৃত চাকমা যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় দায়ের করা মামলা আসামি ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করে। এর মধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে কিছু আসামী টেকনাফ থেকে চকরিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে লামার বাজারের মেরিন ড্রাইভে অবস্থান করছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। ভিকটিম পাভেল চাকমা এদের অপহরণ মামলার ঘটনার সাথে আসামী মর্মে সনাক্ত করেন। আসামীদের সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য বলছে, এ নিয়ে গত ১৮ মাসে টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৫৬ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।