কক্সবাজার জেলার আলোচিত ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়কে ফের ভয়াবহ অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড়ি অঞ্চল ঈদগড়-ঈদগাও সড়কের হিমছড়ি নামক ঢালা থেকে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা গাছ ফেলে রাস্তা অবরোধ করে তিনজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
সোমবার (১৬ জুন) সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুইটি সিএনজি অটোরিকশা ও একটি মাছ বহনকারী পিকআপ ঐ স্থানে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা রাস্তার মাঝে গাছ ফেলে যানবাহন আটকে দেয়। একটি সিএনজি অটোরিকশা পালিয়ে যেতে পারলেও অপর দুইটি গাড়ির আরোহীদের কাছ থেকে সর্বস্ব লুট করে নেয় এবং তিনজনকে অপহরণ করে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যায়।
অপহৃতরা হলেন- ঈদগড়ের গুইন্না পাড়া, ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহজাহানের ছেলে মোঃ শাহেদ (১৮), ফাতেমা ঘোনা’র মোঃ আলমের ছেলে আমির সোলতান (১৯) এবং বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ও বর্তমানে মধ্যম বাইশারীর ভাড়া বাসায় বসবাসরত আরিফুল ইসলাম কুদ্দুস (৪২)।
প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজি চালক মো. সেলিম জানান, “আমি বাইশারী থেকে আরিফুলকে নিয়ে চকরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিই। হিমছড়ি ঢালায় পৌঁছালে দেখতে পাই, দুর্বৃত্তরা অস্ত্র হাতে রাস্তার মাঝে গাছ ফেলে গাড়ি থামিয়ে দেয়। আমি কোনোমতে ফিরে পালাতে সক্ষম হলেও আরিফুল ও অন্যরা ধরা পড়ে।”
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে অপহরণ ও সন্ত্রাসের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। মাঝে মাঝে প্রশাসনিক তৎপরতা দেখা গেলেও স্থায়ী কোন সমাধান মিলছে না। অনেকেই হিমছড়ি ঢালা ও ঈদগাঁও ঢালার মাঝামাঝি এলাকায় স্থায়ী সেনা ক্যাম্প স্থাপনের জোর দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় জনতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এভাবে আর কত প্রাণ গেলে সরকারের টনক নড়বে? এটি শুধু কারও একার দাবি নয়, ঈদগড়-বাইশারী ও আশেপাশের লক্ষাধিক জনসাধারণের প্রাণের দাবি।”
ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মছিউর রহমান বলেন, “সংবাদ পাওয়ার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান পরিচালনা করি। অপহৃতদের খুঁজে না পাওয়া গেলেও উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সব ধরনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়কে এর আগেও একাধিক অপহরণ, লুটপাট ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসনের প্রতি জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।