“জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই” আন্দোলন শেষে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকে আশাবাদী যে আন্তর্জাতিক মহলে তিস্তার সংকট গুরুত্ব পাবে, আবার কেউ কেউ সরকার ও ভারতের প্রতিক্রিয়াকে অনিশ্চিত বলে মনে করছেন।
তিস্তার চরে বসবাসরত কৃষক রফিকুল ইসলাম (৫৬) বলেন, “৪৮ ঘণ্টার আন্দোলনে আমাদের কষ্টের গল্প বিশ্ব শুনেছে। কিন্তু চুক্তি না হলে সব বৃথা।”
মৎস্যজীবী সমিতির নেতা জাহাঙ্গীর আলম (৪৮) অভিযোগ করেন, “নদী শুকিয়ে মাছ ধরা কমেছে। আন্দোলন আমাদের স্বপ্ন দেখালেও কাজের কাজ কিছু হয়নি এখনো।”
তরুণ সমাজ ও মানবতা কর্মী সুমাইয়া আক্তার (৩০) বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় আন্দোলনের ভিডিয়ালাখি ভাইরাল হয়েছে। এটাই আমাদের বড় অর্জন।”
তবে স্থানীয় ছাত্রদল সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল নোমান সতর্ক করেন, “রাজনৈতিক দলগুলো এটাকে ভোটের হাতিয়ার না বানালে ভালো হয়।”
স্থানীয় ইউএনও শামীম আহমেদ জানান, “তিস্তার সমস্যা সমাধানে সরকারের পরিকল্পনা চলছে।”
তবে বিএনপি নেতা আসাদুল হাবিব দুলু দাবি করেন, “আন্দোলন থামবে না, চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত।”
গণমাধ্যম কর্মী তমাল রায় বলেছেন, “প্রোগ্রামের একদিন আগে থেকেই আমরা এখানে অবস্থান করি এবং এই আন্দোলনকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাই, যাতে তিস্তা পাড়ের মানুষের এই দুঃখ দুর্দশা অবসান হয়। এখন সরকার প্রধান ও আন্তর্জাতিক মহলের সদিচ্ছার উপর নির্ভর করবে।”
তিস্তা নদী রক্ষা কমিটি ঘোষণা দিয়েছে, মার্চে ঢাকায় মানববন্ধন ও জরুরি বৈঠকের দাবি জানানো হবে। স্থানীয়রা চাইছেন, আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের সম্পৃক্ত করা হোক।
আন্দোলন তিস্তাপাড়ের মানুষের আশা জাগালেও, স্থায়ী সমাধানের পথে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি ও আন্তঃদেশীয় সহযোগিতাই মুখ্য। জনগণের দাবি “নদী বাঁচাও, আমাদের অস্তিত্ব বাঁচাও।”
“জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই” আন্দোলন তিস্তা নদীর পাড়বাসীদের মধ্যে গভীর প্রতিধ্বনি তৈরি করেছে। এই আন্দোলনটি তিস্তা নদীকে বাঁচানোর জন্য শুরু হয়েছিল এবং এটি পরিবেশ ও জীবনধারার সম্ভাবনার প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তিস্তা পাড়ের জনগণ এই আন্দোলনের প্রতি উৎসাহী সাড়া দিয়েছেন এবং নদীর অবক্ষয় ও দূষণের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন।