রবি ৭ টি টাওয়ারে হা’ম’লা: সংযোগ বি’চ্ছি’ন্ন, যন্ত্রাংশ লু’ট

 

খাগড়াছড়ির তিনটি উপজেলায় রবি মোবাইল নেটওয়ার্কের সাতটি টাওয়ারে হামলা চালিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও যন্ত্রাংশ লুটের ঘটনা ঘটেছে। সংশ্লিষ্টরা এ হামলার পেছনে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর হাত থাকার অভিযোগ তুলেছেন। খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানান, সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া টাওয়ারগুলো বেসরকারি টেলিকম প্রতিষ্ঠান রবি’র অন্তর্ভুক্ত। নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র মতে, ২২ জানুয়ারি ভোরে দীঘিনালা, মানিকছড়ি এবং মাটিরাঙা উপজেলায় একযোগে এ হামলার ঘটনা ঘটে। সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবিতে ব্যর্থ হয়ে হামলা চালিয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।

 

দীঘিনালার বাবুছড়া কার্বারী পাড়া, বাঘাইছড়ি মুখ, জারুলছড়ি, বড়াদম এবং সাধনাটিলার পাঁচটি টাওয়ার থেকে নেটওয়ার্ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে যন্ত্রাংশ রুমে ভাঙচুর এবং লুটপাত চালানো হয়। মানিকছড়ি ও মাটিরাঙা এলাকায় আরও দুটি টাওয়ার হামলার শিকার হয়েছে।

 

রবি’র স্থানীয় এক প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রতিবছর মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠনগুলো মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। এ বছরও চাঁদা চাওয়া হয়েছিল। তবে কেন টাওয়ারগুলোতে হামলা হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই। প্রতিষ্ঠানটির নেটওয়ার্কিং টিম বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

 

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, কয়েকটি টাওয়ার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার খবর পেয়েছি। তবে এ নিয়ে এখনো আইনগত কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। এর ফলে এলাকার লক্ষাধিক গ্রাহক মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবার বাইরে থাকায় অসুবিধায় পড়েছেন।

 

পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর চাঁদাবাজি এবং নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা ব্যাহত করার প্রবণতা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব ঘটনার কারণে তাদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হয়। অনেক গ্রাহক জরুরি যোগাযোগ না করতে পারায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

 

পাহাড়ি অঞ্চলের এই অস্থিতিশীল পরিবেশ এবং চাঁদাবাজির ঘটনাগুলো দ্রুত বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ। এ ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম বন্ধ না হলে মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং অন্যান্য জরুরি সেবা ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

 

রবি এবং অন্যান্য টেলিকম কোম্পানির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, পাহাড়ি অঞ্চলে নেটওয়ার্ক স্থিতিশীল রাখতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

এমন পরিস্থিতিতে পাহাড়ের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email