খাগড়াছড়িতে মারমা জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দা’বী’তে স্মারকলিপি ও মান’ব’ব’ন্ধন

পার্বত্য চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসমূহে মারমা জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবীতে স্মারকলিপি ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টায় খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সামনে জাগ্রত মারমা সমাজের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ মারমা যুব ঐক্য পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি ইঞ্জিঃ ক্যরী মগের সঞ্চালনায় কংচাইরী মাষ্টারের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুমেল মারমা,সদর উপজেলা সভাপতি মংখই মারমা,সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক থৈহ্লাঅং মারমা,উপজেলা শাখার ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক উজ্জ্বল মারমা, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি উসাই মারমা, মারমা মহিলা ঐক্য পরিষদ সদর উপজেলা শাখার সভা নেত্রী মিনুচিং সহ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন,তিন পার্বত্য চট্টগ্রামের দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় হলো মারমা জাতিগোষ্ঠী। এ অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মারমা জতিগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামের বৈষম্যহীন এবং সম্প্রীতিময় অনুমা প্রতিষ্ঠায় বিভিন্নভাবে অবদান রেখে এসেছে। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মহান মুক্তিযুদ্ধেও মারমা জনগোষ্ঠির অবদান অনস্বীকার্য। মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি সমর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একমাত্র মং সার্কেল প্রধান ‘রাজা মংপ্রুসাইনদান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আদিবাসীদের মধ্যে একমাত্র বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ‘উক্য চিং ওরফে (ইউ কে. চিং) মারমা’ এই জনগোষ্ঠির গর্বিত সন্তান। পার্বত্য চট্টগ্রামের সংকট মোকাবিলায় মারমা জনগোষ্ঠী সর্বমউ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন এবং সংলাপের মাধ্যমে সমাধানের পক্ষে কাজ করে এসেছে। যা এ অঞ্চলের সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের দ্বিতীয় বৃহত্তম মারমা জনগোষ্ঠি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত গঠনের পর পার্বত্য চট্টগ্রামের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্বত্য বা অভ্যন্তরীন পায়। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন এবং অভ্যন্তরীণ উথান্ত নির্দিষ্টকরণ ও পুনর্বাচনয়ন বোর্ড,
টাস্কফোর্স, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ (খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান)-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে চেয়ারম্যান/ভাইস চেয়ারম্যান ও নেতৃত্বের ক্ষেত্রে মারমা জাতিগোষ্ঠীকে বঞ্চিত ও উপেক্ষিত করা হয়েছে। এতে কেবল মারমা সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণই নয়, বরং পুরো পার্বত্য অঞ্চলের সামাজিক ভারসাম্য ও উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে দারুণভাবে ব্যাহত করা হয়েছে। এতোসব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান পদে মারমা সম্প্রদায়ের একজন প্রতিনিধিও না থাকায় আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বৃহত্তর মারমা জনগোষ্ঠি গভীরভাবে আশাহত এবং মর্মাহত হয়েছি। মারমা জাতিগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যারা শিক্ষা, সংস্কৃতি, সামাজিক উন্নয়ন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার কার্যকর বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদে তাদের অনুপস্থিতি পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের আস্থার সংকট সৃষ্টি করেছে।

তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মারমা জনগোষ্ঠির বিনীত আবেদন পার্বত্য চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসমূহ নতুন করে পূর্নগঠন করে মারমা জাতিগোষ্ঠীর উপযুক্ত প্রার্থীদের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে। বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিনির্মাণে সামাজিক ভারসাম্য ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং পার্বত্য অঞ্চলে বৈষম্য দূর করে উন্নয়নের ধারাবাহিকতাসহ সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে।

মানববন্ধন শেষে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন মারমা জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email