অ’ভা’বের তা’ড়না’য় সবকিছু বিক্রি, ঘর করে দেওয়ার প্র’তিশ্রু’তি সে’নাবা’হি’নীর

অভাবের তাড়নায় সব জমি বিক্রি করে দিন কাটাচ্ছিলেন খাগড়াছড়ির পেরাছড়া ইউনিয়নের বেলতলী পাড়ার বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও তার স্ত্রী প্রভাতী বালা ত্রিপুরা। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে অসহনীয় দুঃখ-কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করা এই পরিবারকে ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান।

শনিবার দুপুরে তিনি এই অসহায় পরিবারের কাছে উপস্থিত হয়ে ১০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করেন এবং তাদের জন্য একটি ঘর নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।

পরিবারটির সদস্য সংখ্যা আটজন। ছেলে মেয়েরা নিজের পরিবার নিয়ে ব্যস্ত থাকায় বাবা-মায়ের সঠিক দেখভাল করতে পারছেন না। মেয়ে কুশুঙ্কতি ত্রিপুরা জানান, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি মানুষের বাড়িতে কাজ করে কোনোভাবে দিন পার করছেন। তিনি সরকারের কাছে তার বাবা-মায়ের জন্য সহায়তার অনুরোধ জানান। ছেলে বিনিময় ত্রিপুরা জানান, তার নিজের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়, তবুও চেষ্টা করেন বাবা-মায়ের জন্য বাজার করতে।

বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা জানান, অভাবের তাড়নায় তার ৪ একর জমি বিক্রি করে ফেলতে হয়েছে। এখন ২০ শতক খাস জমিতে কোনোভাবে বসবাস করছেন। সেনাবাহিনীর সাহায্য পেয়ে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ঘর পাওয়ার প্রতিশ্রুতিতে অনেক আনন্দিত।

রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান জানান, সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি এই পরিবারের দুর্দশার কথা জানতে পারেন। তাই সরাসরি তাদের কাছে গিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি দেখেন এবং তাদের ঘর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনী পাহাড়ের সাধারণ মানুষের পাশে সবসময় রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

এ ধরনের উদ্যোগ এলাকাবাসীর মধ্যে প্রশংসার দাবি করেছে। স্থানীয়রা মনে করেন, সেনাবাহিনীর এমন উদ্যোগ পাহাড়ের দরিদ্র মানুষের কষ্ট লাঘবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরার পরিবারের সদস্যরা সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, এই সহযোগিতা তাদের জীবনে নতুন আলোর দিশা দেখাবে।

পাহাড়ি এলাকার অসহায় মানুষের জন্য সেনাবাহিনীর এমন মানবিক কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। তাদের মতে, এ ধরনের উদ্যোগ সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হবে।

বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরার পরিবার নতুন ঘরের আশায় দিন গুনছেন। সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগ শুধু তাদের জীবনের দুঃখ লাঘব করবে না, বরং অন্য অসহায় পরিবারগুলোর জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email