দীঘিনালার ঝুঁ’কিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ: ঘটছে দু’র্ঘট’না 

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা-লংগদু সড়ক ও সাজেক সড়কে বেইলি ব্রিজগুলোর বেহাল দশা দীর্ঘদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব সেতু দিয়ে অতিরিক্ত ভার বহন করে যানবাহন চলাচলের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিকল্প রাস্তার অভাবে চালকেরা পাঁচ টনের বেশি মাল বহন করলেও তা নজরদারির আওতায় আসছে না। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত এসব ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে পাকা সেতু নির্মাণ করা হোক।

সম্প্রতি দীঘিনালার চৌমুহনী এলাকায় অতিরিক্ত কাঠবোঝাই ট্রাকের কারণে একটি বেইলি ব্রিজের পাটাতন খুলে পড়ে। এতে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হয়। দুই দিন ধরে বন্ধ ছিল ভারী যান চলাচল। এর আগেও এমন বহুবার ঘটেছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে একই স্থানে দুটি ট্রাক ও একটি যাত্রীবাহী মাহিন্দ্র দুর্ঘটনার শিকার হয়। এছাড়া ২০২৩ সালের মার্চে মাইনী নদীর উপর একটি বেইলি ব্রিজ ভেঙে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ১৯৯০ সালে নির্মিত এই সেতুগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও নিয়ম না মানার কারণে সেতুগুলো ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী বিটু চন্দ্র নাথ জানান, পাঁচ টনের বেশি ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও কেউ তা মানছে না। এর ফলে সেতুগুলো আরও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

দীঘিনালা ও সাজেক সড়কে ৮টি বেইলি ব্রিজ রয়েছে। স্থানীয়দের মতে, এগুলোর সবকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, সেতুগুলো প্রায়ই ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে এবং সময়মতো পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে না। কেউ কেউ সেতুর নাট-বল্টু খোলা থাকার অভিযোগও করেছেন।

এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি ট্রাক মালিক গ্রুপের লাইনম্যান সম্পাদক কৃষ্ণ কুমার দে বলেন, বেইলি সেতুগুলোর পরিবর্তে পাকা সেতু নির্মিত হলে যান চলাচল অনেক সুবিধাজনক হবে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে।
খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ কৌরাইশিন জানান, দীঘিনালায় মোট ৬টি বেইলি ব্রিজ রয়েছে। এর মধ্যে জামতলী ও বেতছড়ি বেইলি ব্রিজের কাজ চলমান রয়েছে। একটি ব্রিজের দরপত্র শেষ হয়েছে এবং এর কাজ দু-এক দিনের মধ্যে শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে সব বেইলি ব্রিজ পাকা করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো দ্রুত সংস্কার ও পাকা করার দাবিতে এলাকাবাসী প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। দীঘিনালার পর্যটন সম্ভাবনা ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতির জন্য এসব সেতু সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email