রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে দুদকের অভিযানে বিভিন্ন অনিয়মের সত্যতা মিলেছে

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে দুর্ণীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়ে খাবারে অনিয়ম, ঔষধ প্রদান না করা, নোংরা পরিবেশ, সরকারী ঔষধ কর্মচারীরা তুলে নেওয়া সহ বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য মিলেছে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে দুর্ণীতি দমন কমিশন (দুদক) ফরিদপুর সমন্বিত আঞ্চলিক কার্যালয়ের সদস্যরা এ অভিযান পরিচালনা করেন।

অভিযানে সদর হাসপাতালের খাবার সরবরাহের রান্না ঘরে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান মুরগীর মাংসের পরিবর্তে ব্রয়লার মুরগী রান্নার আয়োজন চলছে। ৮১জন রোগীর জন্য ১৫ কেজি মাংসের পরিবর্তে মাত্র ১০ কেজি ব্রয়লার প্রদান করে ঠিকাদার। চিকন চাউলের পরিবর্তে মোটা চাল, ডাল মাত্র দেড় কেজি। সরকারী বিনামূল্যে প্রদানের ঔষধ শুধু গরীব অসহায় রোগীদের জন্য প্রদান করার কথা থাকলেও সেখানে শুধু গ্যাসের ট্যাবলেট প্রদান করা হচ্ছে। আবার হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের ইচ্ছা মতো ঔষধ নিয়ে চলে যাওয়ার বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তারা।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগী ও স্বজন বলেন, হাসপাতাল থেকে ৩-৪ দিন পর খাবার দেওয়া হয়। খাবার সবাই পায় না। এক সপ্তাহ থাকলে দুইদিন খাবার পায়। ঔষধ বেশির ভাগ বাইরের ফার্মেসী থেকে ক্রয় করে খেতে হয়। হাসপাতাল থেকে শুধুমাত্র গ্যাসের ট্যাবলেট প্রদান করা হয়। বাথরুমে যাওয়া যায় না। হাসপাতালে নোংরা পরিবেশ। এখানে অসুস্থ থেকে সুস্থ হতে এসে মনে হয় আরও অসুস্থ হয়ে যেতে হয়। একটু ইনজুরি রোগী আসলেই তাকে ফরিদপুরে রিফার্ট করে দেওয়া হয়। আমরা চাই রাজবাড়ী হাসপাতালটি মানুষের সেবা প্রদানের যোগ্য হয়ে উঠুক।

রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকা মোমেনা বেগম বলেন, আমি ২১ বছর ধরে হাসপাতালে রান্না করি। আমার কোন কিছু করার নেই। ঠিকাদার যা দিবে তাই রান্না করে দিবো।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ শেখ মোঃ আব্দুল হান্নান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর কর্মকর্তারা কাউকে না জানিয়ে হঠাৎ করেই অভিযান পরিচালনা করেছেন। এতে আমি খুশি। আমি রাজবাড়ীর সন্তান হিসেবে মানুষ সেবা পাক বিষয়টি আমিও চাই। যে সকল অনিয়ম পেয়েছেন তার সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দুর্ণীতি দমন কমিশন (দুদক) ফরিদপুর সমন্বিত আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রতন কুমার দাস বলেন, রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ছিল। এ কারণে হঠাৎ করেই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে খাবারে অনিয়ম, ঔষধ প্রদানে অনিয়ম, হাসপাতাল নোংরা পরিবেশ, ঠিক মতো খাবার প্রদান না করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্ণীতির বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা মামলা সহ অধিকতর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করবো। পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email