সারাদেশে মিষ্টি পানের চাহিদা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে মহেশখালী দ্বীপের সমতল ভূমিতে মৌসুমী পান চাষে ঝুঁকছেন চাষীরা। গত বছর মৌসুমী পান বরজে ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর পান বরজ বেড়েছে দ্বিগুণ। চলতি মৌসুমে মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক, কালারমারছড়া, বড় মহেশখালী ও শাপলাপুর এই ৪টি ইউনিয়নের ১৪ শ হেক্টর জমিতে প্রায় ৮ হাজার পান বরজ করছেন প্রায় ১৩ হাজার পান চাষী। পান চাষ মহেশখালী দ্বীপের বাসিন্দাদের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী সুপ্রাচীন পেশা। মহেশখালীর পাহাড়ি এলাকা পান চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী হলে ও বর্ষার শেষে এই দ্বীপের সমতল ভূমিতে শুরু হয়। মৌসুমী পান চাষ। মহেশখালীর পান সারাদেশে বিখ্যাত হওয়ার পেছনের মূল কারণ- এই দ্বীপের পানে রয়েছে মিষ্টি স্বাদ। মিষ্টি পান ছাড়াও এ দ্বীপে কিছু পরিমাণ সাচি পানের চাষ ও করা হয়।চাষের জন্য প্রচুর দক্ষতা ও দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা দরকার যা মহেশখালীর মানুষেরা বংশ পরস্পরায় লালন করে থাকে। মহেশখালীতে পান ক্ষেত কে বলা হয় পান বরজ। মহেশখালীর পানের বরজ দুই ধরনের পাহাড়ি বরজ ও বিল বরজ বা মৌসুমী পান বরজ। মহেশখালী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, এ দ্বীপের প্রায় ১৪০০ হেক্টর জায়গা জুড়ে প্রায় ৮ হাজার পান বরজ আছে। পান চাষীর সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার।মধ্যেপ্রাচ্য সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পান রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। মহেশখালীর মিষ্টি পান শুধু এই দ্বীপে নই, সারা বাংলাদেশে অতিথি আপ্যায়নের অপরিহার্য অনুষঙ্গ। চট্টগ্রামের বিখ্যাত শিল্পী শেফালী ঘোষ গেয়েছেন- যদি সুন্দর একখান মুখপাইতাম, মইশখালীর পানর খিলী তারে বানাই খাওয়াইতাম। শাপলাপুর ইউনিয়নের পান চাষী দেলোয়ার হোসেন দুলাল জানান, গত বছর বড় আকারের প্রতিটি পানের বিরা ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা বিত্রুি হয়েছে। তাই এই বছর গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ জমিতে পান চাষ করছেন চাষীরা। বর্তমানে ও পানের ভালো দাম রয়েছে। মহেশখালী উপজেলা পান চাষী সমিতির সভাপতি মোঃ শাহ আলম বলেন, বর্তমান বাজারের পান চাষের যাবতীয় সামগ্রী ও সারের দাম বেড়েছে বিধায় সাধারণ গরীব কৃষকেরা পান চাষ করতে পুঁজির অভাবে হিমশিম খাচ্ছেন। তাই তিনি সরকারি ভাবে প্রান্তিক পান চাষীদের সহজ শর্তে ঋণদানের দাবি জানান। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র পান চাষীদের কে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
