আগামী ২৩ নভেম্বর হতে ০৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানের লাহোর ও মুলতানে অনুষ্ঠিতব্য ৪র্থ ব্লাইন্ড টি-২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে একজন লাল সবুজের প্রতিনিধি হিসেবে উক্ত আসরে প্রতিনিধিত্ব করছে বান্দরবানের সুকেল তঞ্চঙ্গ্যা। আজ দুপুর ১টার ফ্লাইটে রওয়ানা হয়েছেন পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা সদরের ৪নং সুয়ালক ইউনিয়নের আমতলী তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ায় সুকেল তংঞ্চঙ্গ্যা জন্ম। জন্মের পর থেকেই চোখে দেখতে পান না।
পরিবারে বড় এক ভাই ও এক বোন রয়েছেন। তার মতো তার বড় বোনও চোখে দেখেন না। সুকেল এর বাবা শুদ্ধধন তঞ্চঙ্গ্যা ও তার মা নুনপরী তঞ্চঙ্গ্যা দুজনই কৃষক। জুমে কাজ করে পরিবারের ভরণ পোষণ করেন। অভাব অনটনের মধ্যেই বেড়ে উঠা সুকেলের।
৬ বছর বয়সে তাকে ভর্তি করানো হয় সুয়ালক ইউনিয়নে সমাজ সেবা অধিদপ্তররে সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কেন্দ্রে। ছোট বেলা থেকে ক্রিকেটের প্রতি অদম্য ভালোবাসা তার। ক্রিকেটের মাধ্যমেই দেশের জন্য বড় কিছু অর্জনের স্বপ্ন মনের মধ্যে পুষে রেখেছেন সুকেল তঞ্চঙ্গ্যা।
কঠোর পরিশ্রম আর মনোবলে ভর করে দেশের অতীত ইতিহাস ভেঙে ২০২২ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ব্লাইন্ড ক্রিকেট কাউন্সিল কর্তৃক তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত ব্লাইন্ড ক্রিকেট টি-২০ বিশ্বকাপে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে অলরাউন্ডার হিসেবে ভারতের মাটিতে অভিষেক তার। অভিষেক ম্যাচে ২২ নাম্বার জার্সি ধারি এই খেলোয়াড়রের অর্জনটাও অনেক। সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই ওভার করে মাত্র ছয় রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে সুকেল ১৪ বলে ৩০ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস দলকে উপহার দিলেও দুর্ভাগ্যবশত ভারতের কাছে হেরে গিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে বাংলাদেশ।
২০২৩ সালে আইবিএস এ ওয়ার্ল্ড গেমস এর বাংলাদেশ জাতীয় দলে জায়গা পায় সুকেল। পুরো টুর্নামেন্টে ভালো বোলিং করে ৯ উইকেট শিকার করেন। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ অর্জন করে তৃতীয় স্থান।
ধারাবাহিক ভালো খেলা উপহার দিয়েই বাংলাদেশ জাতীয় দলে ডাক পেয়েছে সুকেল তঞ্চঙ্গ্যা । ব্লাইন্ড ক্রিকেট কাউন্সিল কৃতক আয়জিত ব্লাইন্ড ক্রিকেট টি-২০ বিশ্বকাপ চতুর্থ আসরে বাংলাদেশের হয়ে খেলবে সুকেল।
পাকিস্থানের উদ্দেশ্যা যাত্রাকালে সুকেল তঞ্চঙ্গ্যা নিজের ফেইসবুকের মাধ্যমে দেশবাসীর দোয়া কামনা করে লিখেন- গতবারের ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠেয় ৩য় টি-২০ ব্লাইন্ড ক্রিকেট বিশ্বকাপে একটুর জন্য চ্যাম্পিয়ন ট্রফি টি ছুতে না পারার আক্ষেপ মিটানো এবং প্রিয় দেশবাসীকে সেই কাঙ্খিত চ্যাম্পিয়ন ট্রফি টি উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়, বুক ভরা আশা, প্রত্যাশা এবং সাথে প্রিয় দেশবাসীর দোয়া নিয়ে আমরা রওয়ানা করছি।
আপনাদের সমর্থন, আমার ও আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা।