চারণ সাংবাদিকের সম্মাননা পেলেন কেন্দুয়ার সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা

পেশাগত জীবনের ৩৯ বছর সাংবাদিকতার জীবনে দ্বিতীয় বারের মতো ম্যাডেল ও সম্মাননা সনদ পেলেন নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার জেষ্ঠ্য সাংবাদিক সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা।

তাঁর এই সম্মান কেন্দুয়া উপজেলা সাংবাদিক সমাজ ও সর্ব মহল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

সাংবাদিক সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা কেন্দুয়া কলেজে প্রথম বর্ষে অধ্যয়নকালীন সময়ে ১৯৮৫ সনের জুন মাসে সংবাদ পত্রে কাজ লেখা শুরু করেন। তিনি প্রথমে দৈনিক নব অভিযান পত্রিকায় কেন্দুয়া প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পর্যায়ক্রমে তিনি দৈনিক সমাচার, দৈনিক খবর, দৈনিক জাহান, আজকের কাগজ, দৈনিক যুগান্তর, সপ্তাহিক রাজধানী বার্তা ও সর্বশেষ দৈনিক সমকাল পত্রিকার জন্মলগ্ন থেকেই কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি হিসেবে সততা ও নিষ্ঠা সাথে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

বর্তমানে তিনি দৈনিক সমকাল, বাংলার দর্পন ও অনলাইন উত্তরাধিকার-৭১ পত্রিকায় কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) উপজেলা প্রতিনিধি এবং দূর্জয় বাংলা পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা ১৯৬৩ সালে কেন্দুয়া উপজেলা চিরাং ইউনিয়নের গোপালাশ্রম গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া ওই গুণী সাংবাদিকের বাবা গৌরাঙ্গ বিশ্বশর্মা ছিলেন কাঠের কারুকার্যের শিল্পী।

তার মা মালতী রানী বিশ্বশর্মা একজন আদর্শ গৃহিনী। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সাংবাদিক সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা মধ্যম।

তিনি সাংবাদিকতার প্রসারে সাংবাদিক বুনিয়াদি প্রশিক্ষনসহ পি আই বি আয়োজিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষনে অংশ গ্রহণ করে সাফল্য অর্জন করেছেন।

১৯৯৪ সালে কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের সাজিউড়া গ্রামের প্রখ্যাত যাত্রা শিল্পী ও পরিচালক সুশীল বিশ্বাসের জেষ্ঠ্য কন্যা অপু রানী বিশ্বাসের সাথে বিবাহ্ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

তিনি এক ছেলে ও দুই কন্যা সন্তানের জনক। বড় ছেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নাটক ও নাট্য তত্ব বিভাগ থেকে (৪৬ তম আর্বতন) ২০২৩ সালে কৃতীত্বের সাথে অর্নাস সম্পন্ন করেন। বর্তমানে সেখানেই এম.এ অধ্যায়নরত।

বড় কন্যা শতাব্দী শর্মা ধুলি কেন্দুয়া সরকারি কলেজের সমাজ কর্ম বিভাগে অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষে অদ্যায়নরত অবস্থায় বিয়ে হয়। সে এখন এক কন্যা সন্তানের মা। ছোট কন্যা প্রিয়ংকা শর্মা তুলি আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ময়মনসিংহে অর্নাস প্রথম বর্ষের সমাজকর্ম বিষয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়েছে।

সাংবাদিকদের পেশাগত মান উন্নয়নে ও ঐক্যের লক্ষ্যে তিনি কেন্দুয়া প্রেসক্লাবে তিনবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৯ সালে তাঁর প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘কবিতা তোমার জন্য’ প্রকাশিত হয়ে সাহিত্য সংস্কৃতি অঙ্গনে সাড়া ফেলে। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পেশাগত কাজের পুরষ্কার হিসেবে একাধিক সম্মাননা স্মারকে পান তিনি।

২০২১ সালে গ্রামীন সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য নান্দাইল প্রেসক্লাবের চল্লিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাঁকে দেওয়া হয় বিশেষ সম্মাননা ও স্মারক।

২০২৩ সালে “প্রতিদিনের কাগজ” পত্রিকার আয়োজনে ঢাকা ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন কার্যালয়ে প্রথম বারের মত “চারণ সাংবাদিক” ম্যাডেল পান তিনি।

চলতি বছরের গত ৫ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় মাওলানা আকরাম খাঁ সভাকক্ষে “প্রতিদিনের কাগজ ও বাংলাদেশ অনলাইন সংবাদপত্র সম্পদক পরিষদের আয়োজনে ময়মনসিংহ বিভাগের তিন গুণী সাংবাদিককে চারণ সাংবাদিক” সম্মাননা সনদ ও ম্যাডেল দেওয়া হয় এর মধ্যে সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা সমকাল কেন্দুয়া উপজেলা প্রতিনিধি এই সম্মাননা লাভ করেন।

সম্মাননা তুলে দেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ফোর্স এডিটর রাকিবুল হাসান ও এস এ টেলিভিশনের সাবেক বার্তা সম্পাদক ও উপস্থাপক রনজক রিজভি।

ওই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন প্রতিদিনের কাগজ প্রধান সম্পাদক নাগরিক সাংবাদিক মোঃ খায়রুল আলম রফিক।

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মার সাহিত্য সংস্কৃতি অঙ্গনেও বলিষ্ঠ বিচারন রয়েছে। তিনি একজন নাট্য ও সংগীত শিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও ভালো কির্তনীয়া। তাছাড়া বাদ্য যন্ত্রে তবলা, মৃদঙ্গ, হারমুনিয়াম, করতাল বাজতেও বেশ পারদর্শি।

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা বলেন, তিনি তার দীর্ঘ পেশাগত জীবনে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে কোনদিন আপোষ করেননি। তিনি বলেন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন যেমন: সমাজ উন্নয়নের পূর্বশর্ত তেমনি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন একজন সাংবাদিকের পেশাগত মর্যাদাকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখায়। সাংবাদিকতার ভিত শক্তিশালী করে।

তিনি নবীন প্রবীন সকল সাংবাদিকদের সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email