ইসরায়েলের হামলায় প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে হিজবুল্লাহ। আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে দখলদার ইসরায়েল জানায়, বিমান হামলা চালিয়ে নাসরুল্লাহকে তারা হত্যা করেছে। এর কয়েক ঘণ্টা পর হিজবুল্লাহ এটির সত্যতা নিশ্চিত করে।
নাসরুল্লাহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম পরিচিত এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। তবে মৃত্যুর আগে নাসরুল্লাহকে গত এক বছরে একবারও প্রকাশ্যে বের হতে দেখা যায়নি। কারণ তিনি সব সময় ইসরায়েলের গুপ্তহত্যার শঙ্কায় ছিলেন।
নাসরুল্লাহর ব্যক্তিগত জীবন ছিল ছায়াবৃত। তার সঙ্গে ইরানের ছিল খুবই গভীর সম্পর্ক। এই ইরানের সহায়তা নিয়েই হিজবুল্লাহকে একটি রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তিতে পরিণত করেছিলেন তিনি। হিজবুল্লাহর সব সদস্য নাসরুল্লাহকে সম্মান করতেন।
নাসরুল্লাহর নেতৃত্বে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসসহ ইরাক ও ইয়েমেনের যোদ্ধাদেরও প্রশিক্ষণ দিয়েছে হিজবুল্লাহ। এছাড়া ইরানের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে অত্যাধুনিক রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র। যেগুলো দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের।
নাসরুল্লাহ হিজবুল্লাহকে একটি সাধারণ সশস্ত্র গোষ্ঠী থেকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, যেখানে লেবাননের সেনাবাহিনীর চেয়ে হিজবুল্লাহর শক্তি-সামর্থ বেশি হয়ে যায়। তাদের লক্ষ্যই ছিল দখলদার ইসরায়েলকে লেবানন থেকে তাড়ানো।
হাসান নাসরুল্লাহ ১৯৬০ সালে বৈরুতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন সবজিবিক্রেতা। তিনি তার ৯ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন।
১৯৮৫ সালে হিজবুল্লাহ আত্মপ্রকাশ করে। ওই সময় একটি খোলা চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে ইসলামের শত্রু হিসেবে অভিহিত করে দলটি। এছাড়া ইসরায়েলের বিলুপ্তিরও দাবি জানায় তারা।
হিজবুল্লাহর উত্থানের সময় নাসরুল্লাহ নেতৃত্বে আসেন। তিনি জানিয়েছিলেন, একজন সাধারণ যোদ্ধা হিসেবে লড়াই করার পর তিনি প্রথমে লেবাননের বালবেকের পরিচালকের দায়িত্ব পান। এরপর পান পুরো বেকা অঞ্চলের। সবশেষে বৈরুতের দায়িত্ব আসে তার কাঁধে।
১৯৯২ সালে হিজবুল্লাহর তৎকালীন প্রধান নেতা আব্বাস-আল-মুসাওই ইসরায়েলি হেলিকপ্টার হামলায় প্রাণ হারান। এরপর মাত্র ৩২ বছর বয়সে হিজবুল্লাহর প্রধানের দায়িত্ব পান হাসান নাসরুল্লাহ।
নাসরুল্লাহ দায়িত্ব নিয়েই সবার প্রথমে আব্বাস-আল-মুসাওইর হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার উদ্যোগ নেন। তিনি দখলদার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট ছোড়ার নির্দেশ দেন।