মুখের ধুলো-ময়লা ভিতর থেকে পরিষ্কার করলেই ত্বক হবে ঝকঝকে, জেনে নিন সঠিক কায়দাকানুন

মেকআপ, ধুলো-ময়লা জমতে জমতে মুখে পুরু পরত পড়ে যায়। দিনের শেষে এক বার মুখ ধুলেই কিন্তু সব ময়লা উঠে যায় না। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখতে প্রয়োজন গভীর ভাবে মুখ পরিষ্কার করা। বাড়িতেও কি তা করা যাবে?

ঝকঝকে ত্বক পেতে, নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন সকলেই জানেন। তারই প্রথম ধাপ ক্লিনজ়িং। সারা দিন কাজ সেরে বাড়ি ফিরে, কী ভাবে সেই কাজটি সারেন?

কেউ বলবেন, ভিজে ওয়াইপস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নেন, কেউ বলবেন ফেসওয়াশ ব্যবহার করেন, কেউ আবার ক্লিনজ়িং মিল্ক। এ বার ভাবুন সকালের সানস্ক্রিন থেকে মেকআপ, তার উপর ঘাম, রাস্তার ধুলো-ময়লা ত্বকের উপরর ঠিক কতটা পুরু হয়ে ওঠে। পরতে পরতে জমা ময়লা কি সামান্য ওয়াইপ্‌স বা ক্লিনজ়িং দিয়ে এক বার হালকা করে মুছে নিলে পুরোপুরি পরিষ্কার হয়? তার উপর চোখের কোণে, পাতায় রয়ে যায় কাজল, মাসকারার ছোঁয়া।

ফলে দিনের পর দিন তেল, ময়লা, নোংরা, মেকআপের অংশ বিশেষ জমতে জমতে ত্বকে ঔজ্জ্বল্য হারায়। ত্বকে জমে থাকা ধুলো-ময়লা খুব ভাল ভাবে পরিষ্কার করার জন্যই ‘ডিপ ক্লিন’ জরুরি।

কী উপকার এতে?

ত্বকে জমা মৃত কোষ, ব্ল্যাক বা হোয়াইট হেড্স, ত্বকের উন্মুক্ত রন্ধ্রে জমে যাওয়া অতিরিক্ত তেল পরিষ্কারে সাহায্য করে।

 

সপ্তাহে এক দিন বা মাসে অন্তত দু-তিন দিন ত্বক ‘ডিপ ক্লিন’ করলে পুজোর আগে রূপ হবে নজরকাড়া। স্যালোঁতে যেতে না চাইলে বাড়িতেও কাজ হতে পারে। শুধু পরপর কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে।

ধাপ ১: মুখে মেকআপ থাকলে প্রথমেই মেকআপ রিমুভার বা ভিজে তুলো বা ওয়াইপস দিয়ে সে সব তুলে নিতে হবে। মেকআপ তোলার জন্য মাইসেলার ওয়াটার ব্যবহার করতে পারেন।

ধাপ ২: এ বার ত্বকের উপযোগী মৃদু ফেসওয়াশ বেছে নিন। শুষ্ক ত্বক হলে, আর্দ্রতা বজায় থাকবে এমন ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন। তৈলাক্ত বা স্বাভাবিক ত্বকের জন্য ফোম বা জেল ফেসওয়াশ বাছাই করুন।

ঈষদুষ্ণ জলে মুখটা ভিজিয়ে নিন। তার পর আঙুলের সাহায্যে ফেসওয়াশ লাগিয়ে নিয়ে হালকা হাতে মালিশ করুন। ১ মিনিট এ ভাবে মালিশ করার পর পরিষ্কার জলের ঝাপটা দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে ফেলুন।

ধাপ ৩: এই পর্বে ত্বকে জমে থাকা তেল, মৃত কোষ দূর করার জন্য এক্সফোলিয়েশন করতে হবে। ত্বকের উপযোগী কোনও স্ক্রাবার কিনে নিন। চাইলে ঘরোয়া উপকরণও বেছে নিতে পারেন। ওট্‌স, কাঠবাদাম একসঙ্গে গুঁড়ো করে, তাতে দুধ মিশিয়ে স্ক্রাব বানিয়ে নিতে পারেন।

চোখের চারপাশ বাদ দিয়ে পুরো মুখে স্ক্রাবার লাগিয়ে আঙুল দিয়ে হালকা ভাবে ২ মিনিট মালিশ করে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

ধাপ ৪: চাইলে এই ধাপে ফেশিয়াল স্টিম ব্যবহার করতে পারেন। গামলায় গরম জল নিতে হবে। একটি বড় তোয়ালে দিয়ে মাথা থেকে গামলা এমন ভাবে ঢেকে দিন আসে যাতে জলের বাষ্প সরাসরি মুখে পৌঁছয়। একেবারে গামলার কাছে মুখ আনা যাবে না। একটু উঁচু থেকে ভাপ নিলেই হবে। গামলার খুব কাছে মুখ আনলে বেশি গরমে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। মিনিট পাঁচেক ভাপ নিয়ে তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে নিলেই হবে। তবে চোখ বন্ধ রাখতে হবে। ৫-৬ ইঞ্চি দূর থেকে ভাপ নিতে হবে। এতে ব্ল্যাক ও হোয়াইট হেড্‌স আলগা হয়ে যাবে। সহজে উঠে যাবে।
ধাপ ৫: ভাপ নেওয়ার পর ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেস প্যাক ব্যবহার করুন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মূলতানি মাটির ফেসপ্যাক বেশ কার্যকর। আবার ত্বক টানটান করতে চাইলে ডিম ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়, তা হলে ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে এক চা চামচ লেবুর রস মেশাবেন, যদি ত্বক খুব শুষ্ক হয়, তা হলে লেবুর রসের বদলে এক চা চামচ মধু মেশাবেন।

এর পর ব্যবহার করতে হবে টোনার ও সবশেষে ময়েশ্চারাইজ়ার। ত্বকের পরিচর্যায় মাত্র ১৫-২০ মিনিট সময় দিলেই, মুখে ফিরবে লাবণ্য।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email