নবীজিকে পাথর মে*রে হ*ত্যার ষ*ড়য*ন্ত্র করেছিলো আবু জাহেল

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে কাফেরদের শত্রুতার পেছনে ছিল নানা কারণ। প্রথমত, ইসলামের মৌলিক শিক্ষা ও একেশ্বরবাদী বিশ্বাস কাফেরদের প্রতিষ্ঠিত সমাজ ব্যবস্থার জন্য একটি বড় হুমকি ছিল।

 দ্বিতীয়ত, নবীজির প্রতি কাফেরদের শত্রুতা ব্যক্তিগত আক্রোশের সাথেও জড়িত ছিল। তিনি মুসলিমদের জন্য নতুন এক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন, যা কাফেরদের ক্ষমতা ও প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ করছিল।

 
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কুরাইশ নেতৃবৃন্দের নিকট হতে ফিরে এলেন তখন আবু জাহেল কুরাইশ নেতৃবৃন্দের মধ্যে ঘোষণা দিয়ে বলল, ‘কুরাইশ ভ্রাতৃবৃন্দ। আপনারা সম্যকরূপে অবগত আছেন যে, মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ধর্মে কলঙ্ক রটাচ্ছে, আমাদের পূর্বপুরুষের নিন্দা করছে, আমাদের জ্ঞানবুদ্ধিকে খাটো বলে রটনা করছে এবং দেবদেবীগণের অবমাননা করছে।
 
এসব কারণে আল্লাহ তাআলার শপথ করে বলছি যে, আমি একখণ্ড ভারী এবং সহজে উঠানো সম্ভব এমন পাথর নিয়ে বসব এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সেজদায় যাবে তখন সেই পাথর মেরে তার মাথা চূর্ণ করে ফেলব। এখন এ অবস্থায় তোমরা আমাকে একা অসহায় ছেড়ে দাও, আর না হয় সাহায্য করো। বনু আবদে মানাফ এর পর যা চাই তা করুক।’ উপস্থিত লোকেরা বলল, আল্লাহর শপথ! আমরা তোমাকে অসহায় ছেড়ে দিতে পারি না। তুমি যা করার ইচ্ছে করেছ তা করে ফেলো।
 
সকাল হলে আবু জাহেল তার ঘোষণার অনুরূপ একখণ্ড পাথর নিয়ে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অপেক্ষায় বসে থাকল। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যথানিয়মে আগমন করলেন এবং সালাতে রত হলেন।
 
কুরাইশগণও সেখানে উপস্থিত হয়ে আবুজাহেলের কথিত কাণ্ড দেখার জন্য অপেক্ষায় রইল। যখন রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেজদায় গমন করলেন তখন আবু জাহেল পাথর উঠিয়ে তার দিকে অগ্রসর হলো, কিন্তু নিকটে পৌঁছে পরাস্ত সৈনিকের মতো স্ববেগে পশ্চাদপসরণ করল। এ সময় তাকে অত্যন্ত বিবর্ণ এবং ভীত-সন্ত্রস্ত দেখাচ্ছিল। তার দু-হাত পাথরের সঙ্গে শক্তভাবে চিমটে লেগে গিয়েছিল। পাথরের গা থেকে হাত ছাড়াতে তাকে যথেষ্ট কষ্ট করতে এবং বেগ পেতে হয়েছিল।
 
এদিকে কুরাইশগণের মধ্য থেকে কিছুসংখ্যক লোক দ্রুত তার নিকট এগিয়ে আসে এবং বলতে থাকে, ‘আবুল হাকাম! ব্যাপারটি হলো কী? কিছুই যেন বুঝে উঠছি না।’ সে বলল, আমি রাত্রিবেলা যা বলেছিলাম তা করার জন্যই এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু যখন তার নিকটে গিয়ে পৌঁছলাম তখন একটি উট আমার সামনে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াল। হায় আল্লাহ! কক্ষনো আমি এমন মস্তক, এমন ঘাড় এবং এমন দাঁতবিশিষ্ট উট দেখিনি। মনে হলো সে যেন আমাকে খেয়ে ফেলতে চাচ্ছে।
 
ইবনু ইসহাক বলেন, আমাকে বলা হয়েছে যে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘উটের রূপ ধারণ করে সেখানে ছিলেন জিবরাইল আ.। আবু জাহেল যদি আমার নিকট যেত তাহলে তার উপর বিপদ অবতীর্ণ হয়ে যেত।’ (ইবনু হিলমা, ১ম খণ্ড, পৃ. : ২৯৮-২৯৯)
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email