ইউপি সদস্যের যোগসাজশ/ফটিকছড়িতে রোহিঙ্গা পরিবারের বসবাস;করেছেন এনআইডি ও

নুরুল আবছার নূরী: ফটিকছড়িতে গৃহস্থালী কাজে যোগ দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছে মিয়ানমার থেকে আসা এক রোহিঙ্গা পরিবার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা টাকার বিনিময়ে এমনটা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই পরিবারের এক সদস্য এনআইডি পেয়ে  পাসপোর্ট তৈরী করে বিদেশেও চলে গেছেন।

সোমবার (১ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে  দেখা যায়,উপজেলার ৭নং কাঞ্চননগর  ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের গুরা মিয়া চৌধুরীর  পরিত্যক্ত কাঁচারী ঘরে বসবাস করছে ১০ সদস্যের এক রোহিঙ্গা পরিবার।

স্থানীয়রা জানায় , দীর্ঘ ২৭ বছর আগে স্বামী ও এক সন্তান নিয়ে সাজেদা বেগম নামে এক রোহিঙ্গা মহিলা এলাকায় আসে। স্থানীয় এক চৌধুরী পরিবারে গৃহস্থালী এবং স্বামী কৃষি কাজে যোগ দিয়ে তারা বসবাস করে আসছিল। পরে তাদের সংসারে পর্যায়ক্রমে জন্ম নেয় আরোও পাঁচ সন্তান। বিগত ২০০৮ সালে দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র(এন আই ডি)  তৈরীর কার্যক্রম শুরু হলে স্থানীয় ইউপি সদস্যের সহযোগীতায় এনআইডি কার্ড করেন সাজেদা ও তার স্বামী মো: হাছান। পিতা-মাতার এনআইডির সুত্র ধরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম সনদ  তৈরীতে মনোযোগী হয় রোহিঙ্গা পরিবারটি। এদের তথ্য উপাত্ত যাচাই করে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের দেয়া  জন্মসনদে ২০১৫ সালে পাসপোর্ট তৈরী করে বিদেশে পাড়ি জমান বড় ছেলে ওসমান। ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক দেয়া জন্মসনদে এনআইডি পান পরিবারটির আরেক ছেলে ইউছুপ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ হতে জন্মসনদ তৈরী করেন সাজেদার দুই ছেলে আইয়ুব ও ইসমাইল। এছাড়া বাপের বাড়ি থেকে জন্ম সনদ নিলেও শ্বশুর বাড়ি ভুজপুর ইউনিয়নের ঠিকানায় এনআইডি তৈরী করেন মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এর দায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নির্বাচন কার্যালয় এড়াতে পারে না। অর্থের বিনিময় ছাড়া এমন কাজ কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলকাছ উদ্দিন বলেন, পরিবারটির ছয় সন্তানকে বাবা মার ঠিকানার সুত্রধরে জন্মসনদ দেয়া হয়েছে। যখন সাজেদা ও তার স্বামী এনআইডির আওতায় আসে তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাঞ্চননগর ইউনিয়ন পরিষদের  চেয়ারম্যান মো. দিদারুল আলম বলেন, তারা কীভাবে ভোটার হয়েছেন তা জানি না। তবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমি বিষয়টি তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি।

ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অরুণ উদয় ত্রিপুরা বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এ কাজে যেই বা যারা জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া  হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। এ রকম একটি অভিযোগ পেয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email