মা’দ’ক-দ’খ’ল বাণিজ্য গি’লে খাচ্ছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত

এভাবের পানীয় আড়ালে সৈকতে বিয়ার-বিদেশী মদ বিক্রি করে হকাররা(বাঁয়ে)। এক বিক্রেতা বিয়ার বিক্রি করছে (ডানে)। ছবি: স্বপন দাশ

মোঃ মুজিবুল্লাহ আহাদ ও আকাশ দে: চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে কোমল পানীয় বিক্রির আড়ালে চলছে মাদক বানিজ্য। সরেজমিনে সৈকত ঘুরে দেখা যায়, ভ্রাম্যমান হকাররা বালতিতে মিনারেল ওয়াটার, কোমল পানীয় স্তরে স্তরে সাজিয়ে বিক্রি করছে। সৈকতে হাক-ডাক দিয়ে এসব পানীয় বিক্রির আড়ালে তারা দেদারসে বিক্রি করছে -বিয়ার ও বিদেশী মদ। বালতির একদম নিচ স্তরে লুকিয়ে রাখা হয় এসব বিয়ার ও মদের ক্যান। পরিচিত মাদক সেবীরা চাইতেই নির্বিঘ্নে এগিয়ে দেন এসব মাদক।

সৈকতে বেড়াতে আসা উঠতি বয়েসী তরুনদেরও আবার এসব মাদক যেচে বিক্রি করেন হকাররা। কৌতুহলী তরুণরা আগ্রহী হতেই হাতে তুলে দেয় এসব মদের ক্যান। অনেকটা প্রকাশ্যেই চলে এই বানিজ্য।

অভিযোগ পেয়ে ক্রেতা সেজে দৈনিক বায়েজিদ’র রিপোর্টার মাদক কিনতে আগ্রহী হওয়ায় নির্বিঘ্নে হাতে তুলে দিতে চায় হকার। দামাদামি করার ছলে সাংবাদিক প্রকাশে এসব বিক্রিতে কোনো সমস্যা হয় কিনা জানতে চাইলে হকাররা যেনো থোরাই কেয়ার করেন। প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন কিনলে কিনেন না কিনলে নাই! এত প্রশ্ন করেন কেন? হকারের কিছুটা সন্দেহ হলে দ্রুত সটকে পড়েন সেখান থেকে।

এদিকে জানতে চাইলে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হকার বলেন, এসব মাদক আসে বিভিন্ন জাহাজ ও বেশ কিছু মাদক ব্যাবসায়ীদের হাত ধরে। বিক্রিতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না তাদের। পুলিশ ও সৈকতের প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে তারা আরামসে করছে এ বাণিজ্য।

সৈকতে ঘুরতে আসা নজরুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী জানান, পতেঙ্গা সৈকতে ঘুরতে এলেই হাতের কাছে এভাবে মাদক পাওয়ায় হুমকির মুখে পড়ছে যুব সমাজ। তিনি জানান,আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত শক্তহাতে এসব দমন করা।

এর আগে দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোয় উঠে আসে পতেঙ্গা সৈকতের দখল বাণিজ্য নিয়ে নানা প্রতিবেদন।নজরে এলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
সৈকতে দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা, অবৈধ স্থাপনা, ঝুপড়ি ঘর আর ভাসমান দোকানগুলোকে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে গত ২০ মে সোমবার সকালে সৈকত এলাকা পরিদর্শনে যান বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সংশ্লিষ্টরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আবদুল মালেক। তারা সৈকত এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির পরিকল্পনার কথা জানান। ব্যবসায়ীরাও তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন ।এসময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সৈকত এলাকায় শৃঙ্খলা ফেরানোর পাশাপাশি পর্যটনের সকল সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email