জনসচেতনতা বাড়াতে কক্সবাজার সৈকতে ‘প্লাস্টিকের দানব’

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের বালিয়াড়িতে গেলে দেখা মিলবে এক অদ্ভুত ‘দানব’র। সমুদ্রে প্লাস্টিকদূষণ রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে নমুনা প্রদর্শনী হিসেবে এ প্লাস্টিক দানব তৈরি করছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দানবটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

সুজাউদ্দিন রুবেল

বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে দেখা যায়, পরিত্যক্ত প্লাস্টিক দিয়ে এক প্রকাণ্ড দানব তৈরি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন শুধু দানবের হাত ও মাথা তৈরির কাজ বাকি রয়েছে। দানবটি তৈরিতে ১৬ জন স্বেচ্ছাসেবক গত ৭ দিন ধরে কাজ করছেন।

এদিকে, অবাক চোখে তাকিয়ে দানব তৈরির দৃশ্য দেখছেন সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকরাও।

সুগন্ধা পয়েন্টে বেড়াতে আসা পর্যটক হুমায়ুন কবির বলেন, এ বছর চার বার কক্সবাজারে ঘুরতে এসেছি। কিন্তু এবার এসে সৈকতে ভিন্ন দৃশ্য দেখতে পেলাম। বিশাল আকৃতির এ দানব অবাক করে দিয়েছে। তবে এটি আমাদের সচেতনতার জন্য তৈরি করা হচ্ছে ভেবে ভালো লাগছে। বেড়াতে এসে আমরা যে সৈকতকে দূষিত করি সেই দৃশ্যই তুলে ধরা হয়েছে প্লাস্টিক দানবের মাধ্যমে। 

প্লাস্টিকের দানব তৈরির মূল পরিকল্পনাকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থী আবির কর্মকার বলেন, প্লাস্টিক দানবটি তৈরি করতে এরই মধ্যে ২০ বস্তা পরিত্যক্ত প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে, যা কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকত থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ৭ দিন ধরে দিনরাত কাজ করে এ দানব তৈরি করছি। এর উচ্চতা ৩৮ ফুট ও প্রস্থ ১৪ ফুট। আমি, শুভ্র বাড়ৈ, নির্জর, সাব্বির, বিদ্যানন্দের ৮ জন স্বেচ্ছাসেবক ও ৪ জন কাঠমিস্ত্রি নিয়ে এই প্লাস্টিক দানবটি তৈরি করছি। মূলত মানুষের কাছে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এ দানব তৈরি করা হয়েছে।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক আকরাম হোসেন শাহীন বলেন, চলমান পরিবেশ দূষণবিরোধী ক্যাম্পেইনে সংগৃহীত প্লাস্টিক দিয়ে আমরা কক্সবাজার সৈকতে একটি ‘দানব’ তৈরি করছি। ধারণা করা হচ্ছে, এই দানব হবে বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকতের সবচেয়ে বড় স্ট্যাচু। এর মাধ্যমে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন মানব সমাজকে একটি বার্তা দিতে চায় যে, প্লাস্টিকের ফলে পরিবেশ যে হারে দূষিত হচ্ছে তা ধীরে ধীরে দানবে রূপ নিচ্ছে। আর এই দানবই পরবর্তীতে মানবসমাজের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তাই, মানুষকে সচেতন করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে এবং টুরিস্ট পুলিশের সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে এই প্লাস্টিক দানবটি।

উল্লেখ্য, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন একটি শিক্ষা অনুকূল বাংলাদেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। অনাথ ও বঞ্চিত শিশুদের মৌলিক চাহিদা মেটানোর জন্য বিদ্যানন্দ এক টাকায় আহার, শীতকালীন ও ঈদে নতুন কাপড় বিতরণ, বিনামূল্যে শিক্ষা কর্মসূচি এবং এক টাকায় চিকিৎসাসহ বেশ কিছু নিয়মিত কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email