পেনাল্টিতেই কোয়ার্টার ফাইনালে ডাচদের হারিয়ে সেমি ফাইনালে আর্জেন্টিনা

বায়েজিদ ডেস্ক

চরম উত্তেজনাকর খেলাটা শেষ পর্যন্ত গড়ালো পেনাল্টি পর্যন্ত। আর এ পেনাল্টিতেই কোয়ার্টার ফাইনালে ডাচদের হারিয়ে সেমি ফাইনালে চলে গেল আর্জেন্টিনা।

খেলার প্রথমার্ধে দারুণ এক অ্যাসিস্টে পথ খুলে দেন লিওনেল মেসি। পরে করলেন একটি গোলও। সেমি-ফাইনালের ওঠার পথ হয়ে যায় সুগম কিন্তু দুর্দান্ত রূপে ঘুরে দাঁড়ায় নেদারল্যান্ডস। আর্জেন্টিনার দেয়া ২ গোল ভঠ ভেহর্স্ট শোধ করে দিলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

লুসাইল স্টেডিয়ামে শুক্রবার দ্বিতীয় কোয়ার্টার-ফাইনাল নির্ধারিত সময় ২-২ গোলে শেষ হয়।

আন্ড্রিস নোপার্টের মস্তবড় ভুলে অষ্টম মিনিটে বিপদে পড়তে বসেছিল নেদারল্যান্ডস। বক্সে হুলিয়ান আলভারেস থাকা সত্ত্বেও তার পাশ দিয়ে ডান দিকে সতীর্থকে পাস দেন ডাচ গোলরক্ষক। বল নিয়ন্ত্রণে নিতে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড চেষ্টা করেও পারেননি, বেঁচে যায় নেদারল্যান্ডস।

দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা চললেও, উল্লেখযোগ্য কিছুই কেউ করতে পারছিল না। ২২তম ডান দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে বক্সের বাইরে থেকে মেসি শট নিলেন ঠিকই, তবে লক্ষ্যের ধারে কাছেও তা ছিল না।

৩৩তম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট নেয় আর্জেন্টিনা। তবে বক্সের বাইরে থেকে রদ্রিগো দে পলের দুর্বল শট যায় গোলরক্ষক বরাবর। এর দুই মিনিট পরই উল্লাসে ভাসে আর্জেন্টিনা শিবির।

প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণ এবং কড়া মার্কিংয়ে তেমন সুবিধা করতে পারছিলেন মেসি। এক মুহূর্তের জাদুতে তিনিই গড়ে দিলেন গোলের পথ। ডান দিক দিয়ে ওঠা আক্রমণে একটু আড়াআড়ি বাঁ দিকে গিয়ে বাড়ালেন রক্ষণচেরা পাস। ডি-বক্সের মুখে প্রথম ছোঁয়ায় বল ভেতরে টেনে দ্বিতীয় টোকায় আগুয়ান গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেন মোলিনা।

আন্তর্জাতিক ফুটবলে আতলেতিকো মাদ্রিদের এই ডিফেন্ডারের এটাই প্রথম গোল।

দ্বিতীয়ার্ধেও একইভাবে খুব বেশি নয়, তবে চাপ ধরে রেখে খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। যদিও নিশ্চিত কোনো সুযোগ মিলছিল না।

৬২তম মিনিটে বল পায়ে দারুণভাবে এগিয়ে যাওয়া মেসিকে আটকাতে বক্সের বাইরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন ভার্জিল ফন ডাইক। বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। তবে মেসির শট রক্ষণ দেয়ালকে এড়লেও ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়।

৭৩তম মিনিটে মেসির সফল স্পট কিকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় আর্জেন্টিনা। বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢোকার মুখে মার্কোস আকুনিয়াকে ডিফেন্ডার ডেনজেল ডামফ্রিস ফাউল করলে পেনাল্টিটি পায় আর্জেন্টিনা। মেসির শটে জায়গা থেকে নড়ার সুযোগ পাননি গোলরক্ষক।

বিশ্বকাপে মেসির গোল হলো ১০টি; স্পর্শ করলেন আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা গাব্রিয়েল বাতিস্তুতার রেকর্ড।

৮৩তম মিনিটে ব্যবধান কমিয়ে লড়াই জমিয়ে তোলেন ভঠ ভেহর্স্ট। স্টিভেন বেরহাস বাঁ দিকের সাইডলাইন থেকে বাড়ানো ক্রসে দুর্দান্ত হেডে দলের নিভতে বসা আশা জাগিয়ে তোলেন বেসিকতাসের ফরোয়ার্ড।

দুই মিনিট পর তারা আবারও প্রতিপক্ষ শিবিরে ভীতি ছড়ায়। এবার বেরহাসের জোরাল শট নিকোলাস তাগলিয়াফিকোর পায়ে লেগে পাশের জালে কাঁপায়। আর্জেন্টিনা শিবিরে জোরাল হয় জয়ের আশা।

একটু একটু করে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে ম্যাচ গড়ায় যোগ করা সময়ে। গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ডাচরা। তবে আর্জেন্টিনা রুখে দিতে থাকে সব।

এমন সময়ে বক্সের বাইরে বিপজ্জনক জায়গায় ভেহর্স্টকে ফাউল করে বসলেন হেরমান পেস্সেইয়া। রেফারির সঙ্গে তর্ক করে হলুদ কার্ড দেখেন মেসি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বদলি নামা টিউন কুপমেইনার্স নিলেন দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত ফ্রি-কিক, রক্ষণ দেয়ালের ওপর দিয়ে নয়, পাশ দিয়ে বাড়ালেন বক্সে। প্রস্তুত ছিলেন ভেহর্স্ট, বল ধরে সঙ্গে লেগে থাকা প্রতিপক্ষকে কোনোরকম সুযোগ না দিয়ে বাঁ পায়ের শটে বল পাঠান জালে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email