বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দুর্গম বড়ইতলী ঝরনায় বেড়াতে গিয়ে পাহাড়ি ঢলে ভেসে নিখোঁজ হওয়া কুরআনে হাফেজ ছাত্র মেহরাব হোসেনের (১৮) মরদেহ চারদিন পর উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২০ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে রেজু ব্রিজ এলাকার খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিখোঁজ মেহরাব কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার মরিচ্যা এলাকার খালেক জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। তিনি চট্টগ্রামের একটি কওমি মাদরাসায় দাখিল দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
নিহতের জেঠাতো ভাই সাজেদুল করিম বলেন, “শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় একজন প্রত্যক্ষদর্শীর ফোনে আমরা রেজু ব্রিজ এলাকায় যাই এবং সেখানেই মেহরাবের মরদেহ সনাক্ত করি। পরে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বাদে আসর মরিচ্যা খালেক জামে মসজিদের কবরস্থানে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হবে।”
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাসরুরুল হক বলেন, “মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে বড়ইতলী ঝরনায় বেড়াতে আসা ১৮ সদস্যের একটি পর্যটক দলের সঙ্গে ছিল মেহরাব। গোসল শেষে বাড়ি ফেরার সময় ঝরনার পাশের ছড়ায় হঠাৎ আসা পাহাড়ি ঢলে সে ভেসে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল অভিযান চালায়, কিন্তু সফল হতে পারেনি। আজ তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।”
মেহরাবের মা ফরহানা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলে ছিল একজন হাফেজ। সে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার বন্ধুদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সে নিজেই ফিরে এল না।”
মেহরাবের বন্ধু ও জেঠাত ভাই সাজেদুর রহমান বলেন, “তারা ১৮ জন বন্ধু মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় বড়ইতলী ঝরনায় পৌঁছায়। গোসল শেষে দুপুর ১টার দিকে ঝরনার পাশের ছড়া পাড়ি দিতে গিয়ে হঠাৎ প্রবল ঢলে মেহরাব তলিয়ে যায়। আমরা চেষ্টার পরও তাকে উদ্ধার করতে পারিনি।”
ঘটনার পর নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরীর নির্দেশে ফায়ার সার্ভিসের একটি বিশেষ উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ অভিযান চালায়। কিন্তু প্রবল স্রোত ও দুর্গম পাহাড়ি পরিবেশের কারণে তারা মেহরাবকে খুঁজে পায়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বর্ষায় পর্যটকদের জন্য কোনো ধরনের নিরাপত্তা বা সতর্কতা ব্যবস্থা না থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন ভ্রমণকারীরা। তারা পর্যটন স্পটগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানান।