চুরি যাওয়া ১৫ লাখ টাকার উৎস জানালেন এডিসি

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাজমুল আহসান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগদানের জন্য চট্টগ্রাম থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিয়েছেন মঙ্গলবার।

কিন্তু চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি ভিআইপি টাওয়ারে ফ্ল্যাট বাসা থেকে ১৫ লাখ টাকা চুরির মামলার পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি। মূলত অভিযুক্ত এরই মধ্যে জামিন পেয়েছেন।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইকবাল হোসেন বলেন, ‘চুরি যাওয়া টাকাগুলো এখনো উদ্ধার করা যায়নি। মামলাটির তদন্ত চলমান।’

মামলার এজাহারে ওই টাকার উৎস উল্লেখ না করলেও এডিসি জানান, ওই টাকা তাঁর এক ব্যাচমেটের চিকিৎসার জন্য কয়েকজন বন্ধু মিলে জড়ো করেছিলেন।

এডিসি মোহাম্মদ নাজমুল আহসান বলেন, ‘আমাদের এক ব্যাচমেটের চিকিৎসার জন্য কজন বন্ধু মিলে টাকাগুলো জোগাড় করেছিলাম। তাঁকে ভারতে চিকিৎসা করানোর কথা ছিল। বন্ধুদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ওই ১৫ লাখ টাকা আমার বাসায় রাখা ছিল। কিন্তু এর মধ্যে টাকাগুলো চুরি হয়ে যায়।’

এ বিষয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্টরাও একই কথা বলেছেন।

এদিকে মামলায় নাম উল্লেখ করা একমাত্র আসামি মনির হোসেন মুরাদ ১ মাস ৭ দিন জেল খেটে জামিন পেয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করতে পারেনি পুলিশ।

অভিযুক্ত মনির হোসেন বলেন, ‘আমি নির্দোষ ছিলাম। চুরির ঘটনার পর আমি ওনার কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু উনি আমার কথায় বিশ্বাস করেননি। পরে আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।’

মুরাদ বলেন, ‘আমি ১০ হাজার টাকার বেতনে চাকরি করতাম। ওনার বাসায় টাকা ছিল নাকি ছিল না, সেই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। শুধু শুধু আমার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।’

এডিসির বাসার কর্মচারী মনির হোসেন আরও বলেন, ‘আমি খেটে খাওয়া কর্মচারী। আমার বিরুদ্ধে যে চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে এর বিচার আমি ওপর ওয়ালার কাছে ছেড়ে দিয়েছি। আমি যে আয় করতাম, সেসব টাকা এখন মামলার পেছনে ব্যয় হচ্ছে।’

গত ৪ জুলাই চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাজমুল আহসান নগরীর কাজীর দেউড়ি ভিআইপি টাওয়ারে ফ্ল্যাট থেকে ১৫ লাখ টাকা চুরির অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মুহাম্মদ মনির হোসেন মুরাদ নামে এক কর্মচারীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে তিনি এ মামলা করেন।

মামলার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত মনির হোসেন মুরাদকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ১ মাস ৭ দিন কারাভোগের পর জামিনে বেরিয়ে আসেন মনির। এই মামলায় নতুন কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।

এডিসির বাসায় চুরির মামলার পর বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়। সরকারি এ কর্মকর্তার বাসায় একসঙ্গে এতগুলো টাকা এল কীভাবে, এ নিয়েও নানা গুঞ্জন রয়েছে।

এডিসি নাজমুল আহসান মামলার অভিযোগে বলেন, গৃহকর্মী মুরাদের যোগসাজশে এই চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার দিন ১৫ লাখ টাকা ছাড়া তাঁর অন্য কোনো কিছু খোয়া যায়নি। তবে টাকাগুলোর উৎস কী সে বিষয়ে অভিযোগে কোনো তথ্য উল্লেখ করেননি তিনি।

বাসায় চুরি হওয়া টাকার কুল কিনারা না করেই চট্টগ্রাম ছাড়ছেন এডিসি রেভিনিউ

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email